পরাবাস্তব কবিতা
আমার ছায়াটা
আগুন মুখে ক’রে একটা দড়ি বেড়ার গায়ে ঝুলছিল সিগারেটটা ধরাতে গিয়ে দেয়ালের গায়ে চোখ পড়ল ঠিক আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে অবিকল নকল করছে আমার ছায়া মাথায় আমারই মতো পাখির বাসা চোখে চশমা ঠোঁটে সিগারেট ধরা ধোঁয়ার জায়গাগুলো নিখুঁতভাবে ফোটালেও আমি লক্ষ করলাম আগুনের জায়গাটা ইচ্ছে করেই যেন চেপে গেল দেয়ালের গা থেকে ছায়াটা ছাড়িয়ে নিয়ে … Read more
ছেলে গেছে বনে
সুগত মৈত্র-কে ১. রাম তো গেলেন বনে দশরথ বাপ দুঃখ যা পেলেন মনে ছ’ রাত্রেই সাফ ভাবতেও আশ্চর্য লাগে, এই কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে সাতকাণ্ড বানিয়ে কী করে গেলেন তরে কঠিন এ সংসারে বাল্মীকি! আমি যদি লিখি, নিয়তিকে করতে আজ্ঞাবহ, মিথ্যে অন্ধ মুনিকে টানব না। লেখা বলতে, মনে পড়ল, ছিল বটে একদা বাসনা লেখক হবার শব্দবেধে ছিল … Read more
যেতে যেতে
তারপর যে-তে যে-তে যে-তে এক নদীর সঙ্গে দেখা।। পায়ে তার ঘুঙুর বাঁধা পরনে উড়ু-উড়ু ঢেউয়ের নীল ঘাগরা। সে নদীর দুদিকে দুটো মুখ। এক মুখে সে আমাকে আসছি বলে দাঁড় করিয়ে রেখে অন্য মুখে ছুটতে ছুটতে চলে গেল। আর যেতে যেতে বুঝিয়ে দিল আমি অমনি করে আসি অমনি করে যাই। বুঝিয়ে দিল আমি থেকেও নেই, না … Read more
সুখটান
বাঁচার গর্বে মাটিতে তার পা পড়ছিল না ব’লে গান গাইতে গাইতে আমরা তাকে সপাটে তুলে দিয়ে এলাম আগুনের দোরগোড়ায় লোকটার জানা ছিল কায়কল্পের জাদু ধুলোকে সোনা করার ছুঁ-মন্তর তাঁর ঝুলিতে থাকত যত রাজ্যের ফেলে-দেওয়া রকমারি পুরনো জিনিস যখন হাত ঢুকিয়ে বার করত কী আশ্চর্য একেবারে ঝকঝকে নতুন লোকটা ছিল নিদারুণ রসিক … Read more
পায়ে পায়ে
সারাক্ষণ সে আমার পায়ে পায়ে সারাক্ষণ পায়ে পায়ে ঘুরঘুর করে। তাকে বলিঃ তোমাকে নিয়ে থাকার সময় নেই- হে বিষাদ, তুমি যাও এখন সময় নেই তুমি যাও। গাছের গুঁড়িতে বুক-পিঠ এক করে যৌবনে পা দিয়ে রয়েছে একটি উলঙ্গ মৃত্যু— আমি এখুনি দেখে আসছিঃ পৃথিবীতে গাঁক-গাঁক করে ফিরছে যে দাঁত-খিঁচানো ভয়, আমি তার গায়ের চামড়াটা … Read more
পাথরের ফুল
ফুলগুলো সরিয়ে নাও, আমার লাগছে। মালা জমে জমে পাহাড় হয়, ফুল জমতে জমতে পাথর। পাথরটা সরিয়ে নাও, আমার লাগছে। এখন আর আমি সেই দশাসই জোয়ান নই। রোদ না, জল না, হাওয়া না— এ শরীরে আর কিছুই সয় না। মনে রেখো এখন আমি মা-র আদুরে ছেলে— একটুতেই গলে যাবো। যাবো বলে সেই কোন সকালে বেরিয়েছি— উঠতে … Read more
ফি বাৎসরিক ভুল ফল অথবা গণ্ডার
একের সংগে একাধিক যোগ করে দেখেছি আমি শেষকালে সাদা খাতা জমা আছে হাতের তালুতে, পথের মধ্যখানে দাঁড়িয়েছি, ডেকেছি নতুন সুরে সবটুকু উজাড় করে, পাইনি নতুন কোনো সঙ্গী পথিক; আলাপের কালে বারবার হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে কিছুই মেলেনি একঝাঁক আধামানুষ অবলীলায় বলে গেছে শেখানো সব কথা, দেখেছি সবুজ দ্বীপে সেইসব প্রাণিদের খেলা যারা ভুল পথে দিয়েছে … Read more
পিতা-পুত্র
তীব্র অবজ্ঞা, উদাসীনতা ও রূঢ়তায় দগ্ধ এক নিমোর্হ অনভিক্ত অসংযত বালক কর্মহীন রাজপথে ভেসে গিয়ে পায় কুড়িয়ে লাল ত্যানায় মোড়া এক মুমূর্ষু কফিন; বালকের কচি মন ভেবে ভেবে হয়রান কী করবে সে সেই কাঠের কফিনখানি, কীভাবে কফিনে করে নিয়ে যাবে একসাথে এতো সব লাশ— বাপ দাদা নানী চাচা চৌদ্দ গোষ্ঠির? সদুত্তরহীন ক্ষুব্ধ মনে বিষন্নতার … Read more